মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম - নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে
প্রিয় পাঠক বন্ধু আমরা মেয়েরা মেকআপ করতে খুব ভালোবাসি এবং আমরা সকলেই চাই যে আমাদের মেকআপ টা যেন দেখতে নরমাল মনে হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে এবং মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম কত?
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে জানাবো যে নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে এবং মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম কত এবং এবং ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম গুলো তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ রইলো।
ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম - নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে
আমরা যখন মেকআপ করি তখন আমরা চাই যেন আমাদের ত্বক দেখতে ন্যাচারাল মনে হয়। কিন্তু মেকআপ করার সময় ন্যাচারাল মেকআপ করা খুব কঠিন কারণ ন্যাচারাল মেকাপের বেজ মেকআপ এবং ফাউন্ডেশন অনেকটা কঠিন এবং জটিলতা রয়েছে।
ন্যাচারাল মেকআপ করার একটি সুবিধা হল এই মেকআপ দেখতে অনেক কেকি এবং ভারী মনে হয় না। তাহলে চলুন এখন জেনে নেই ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম গুলো কি কি এবং ন্যাচারাল ও নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে,
ন্যাচারাল মেকআপ করতে হলে প্রথমেই পুরো ফেসটাকে ক্লিনজার গেম ক্লিনিং করে নিতে হবে। ক্লিনিং করার পরে একটি তোয়ালে দে আলতোভাবে পুরো মুখের পানি মুছে ফেলতে হবে। মুখের পানির মুছে ফেলার পরে মুখে ময়েশ্চারাইজার আঙুলের সাহায্যে ভালোভাবে পুরো মুখে লাগাতে হবে।
পুরো মুখে ময়শ্চারাইজার লাগানোর পরে টোনার ব্যবহার করতে হবে যেন ত্বকের সেলস গুলো থেকে ঘাম তেল নির্গত না হতে পারে। টোনার ব্যবহারের পরে এলোভেরা অথবা ফিটমি প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যে প্রাইমার যেন পুরো মুখে ভালোভাবে মিশে। প্রাইমার লাগানোর পরে ৫ থেকে ৭ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে যেন পুরো মুখে ভালোভাবে প্রাইমারটি শুকিয়ে যায়।
প্রাইমার শুকিয়ে যাওয়ার পরে আসল কাজটি করতে হবে এবং সে আসল কাজটি হল ফাউন্ডেশনের ব্যবহার। মেকআপ করার সময় আপনি অবশ্যই আপনার ত্বকের চেয়ে একটু ব্রাইট কালারের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন তাহলে আপনার ত্বক দেখতে অনেকটা ফ্লোলেস এবং ন্যাচারাল মনে হবে।
ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পরে চোখের নিচের কালো দাগ এবং মুখের কোনো ডার্ক সার্কেল হাইড করার জন্য কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। কনসিলার ব্যবহারের পরে লুজ পাউডার দিয়ে পুরো বেজটাকে সেটআপ করে নিতে হবে।
যখনই আপনার মুখের বেস যেটা হয়ে যাবে তখন আপনি আপনার চোখের মেকআপ করে ফেলবেন।চোখের মেকআপ টাও খুব সাধারন রাখবেন ন্যাচারাল মেকাপের ক্ষেত্রে তাহলে ভালো লাগবে সবশেষে একটি মেকআপ ফিক্সার দিয়ে স্প্রে করে মেকাপটি ফিক্স করে নেবেন।
মেকআপ করার জিনিসের নাম ও ছবি
আপনারা অনেকেই মেকআপ করেন কিন্তু মেকআপ করার জন্য সঠিক প্রোডাক্ট কোনটি আপনারা বুঝতে পারেন না এবং মেকআপ করতে কি কি জিনিসের প্রয়োজন সেগুলোও জানেন না তাই আপনারা গুগলে জানতে চান যে মেকআপ করার জিনিসের নাম ও ছবি।
তাই আমি আজকে আপনাদের জন্য মেকআপ করতে যে সকল জিনিস প্রয়োজন সবগুলোর নাম এবং ছবি বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দেবো। আশা করছি আপনারা এখন থেকে মেকাপ করতে কি কি প্রয়োজন এবং মেকআপ করার জিনিসের নাম এবং ছবি দেখে চিনতে পারবেন।
- কন্সিলার
- ফাউন্ডেশন
- হাইলাইটার
- কন্টোনার
- ব্লাশার
- প্রাইমার
- টোনার
- ময়েশ্চরাইজার
- মেকআপ ফিক্সার স্প্রে
- আইশ্যাডো
- আইলাইনার
- মাস্কারা
- কাজল
- লিপস্টিক
- লিপ লাইনার
ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম
প্রিয় পাঠক বন্ধু আপনি কি কোন মেকআপ আর্টিস্টকে টাকা না দিয়ে নিজেই ঘরে বসে মেকআপ করতে চান ? কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না যে আপনি কিভাবে নিজে নিজে মেকআপ করবেন এবং মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম কত কিছুই জানেন না তাহলে আপনি পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে জানাবো ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম এবং দীর্ঘক্ষণ মেকআপ কে লাস্টিং করার ট্রিকস। তাহলে চলুন আর দেরি না জেনে নিই ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম,
- ঘরে বসে মেকআপ করার জন্য প্রথমে আপনি আপনার মুখ টিকে ঠান্ডা পানিতে অথবা বরফের মধ্যে পাঁচ থেকে সাত মিনিট রাখবেন তাহলে ত্বকের cell গুলো মেকআপ করার পরেও ড্যামেজ হবে না।
- দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে আপনি আপনার মুখ থেকে ভালোভাবে ক্লিনজার দিয়ে ক্লিনিং করে নিবেন এবং একটি টিস্যু পেপার অথবা দুয়ালে দিয়ে মুখ থেকে ভালোভাবে মুছে নিবেন।
- মুখের পানে মুছে যাওয়ার পরে মুখে আপনি আপনার ডেইলি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরে আপনি আপনার ত্বকে টোনার এপ্লাই করবেন। টোনার আপনি যে কোন কোম্পানির ব্যবহার করতে পারেন তবে সবথেকে ভালো গোলাপ জলের টোনার।
- টোনার ব্যবহারের পরে আপনি আপনার ফেসে প্রাইমার লাগাবেন।
- যদি আপনার মুখে অনেক ডার্ক সার্কেল ব্রনের দাগ থেকে থাকে তাহলে কনসিলার দিয়ে সে দাগ গুলোকে হাইড করে নেবেন।
- এরপরে আপনি যদি আপনার ত্বকের শেড অনুযায়ী ফাউন্ডেশন না খুঁজে পান তাহলে আপনি একটি কাজ করতে পারবেন একটি ব্রাইট ফাউন্ডেশন এবং একটি ডার্ক ফাউন্ডেশন একসাথে মিশ্রিত করে আপনার পুরো ফেসে এপ্লাই করবেন।
- বিউটি ব্লেন্ডার অথবা পাব পুরো ফেসে ভালোভাবে ফাউন্ডেশন টি ব্লেন্ড করার পরে লুজ পাউডার দিয়ে মেকআপ টিকে ভালোভাবে সেট করে নিবেন।
- ভালোভাবে ফেসের মেকআপ সেট করার পরে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী আই মেকআপ করবেন এবং সর্বশেষে আপনি আপনার দুই গালে এবং চোখের কর্নারে হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করে নিবেন।
- হাইলাইট এর কাজ শেষে মেকাপ ফিক্সার দিয়ে পুরো মেকাপটি ফিক্স করে নেবেন এবং সাথে করে একটি কম্প্যাক্ট পাউডার ক্যারি করবেন যেন যখনই কোথাও মেকআপ নষ্ট হয়েছে মনে হবে আপনি সেখানে কমপ্যাক পাউডার দিয়ে ঠিক করে নিতে পারেন।
মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম
- ময়েশ্চারাইজারঃ মেকআপ করার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান জিনিস হল ময়েশ্চারাইজার কারণ এটাই আমাদের ত্বককে মেকাপের করার কারণে সকল প্রকার ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে। বিভিন্ন কোম্পানির ময়শ্চারাইজার রয়েছে তবে নিভিয়া এবং এলোভেরা জেলের ময়েশ্চারাইজার খুব কার্যকরী এবং এই ময়েশ্চারাইজার এর দাম ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।
- টোনারঃ টোনারও অনেক কোম্পানির রয়েছে তবে আপনি যদি কোন ভালো ব্যবহার করতে চান তাহলে john's বেবি ক্রিম অথবা গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। এই টোনার টির দাম পড়বে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
- প্রাইমারঃ মেকআপ করার জন্য প্রাইমারি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। বিভিন্ন কোম্পানির প্রাইমারির মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হলো ফিডমি কোম্পানির প্রাইমার। এই প্রাইমারির দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।
- ফাউন্ডেশনঃ মেকআপ করার ক্ষেত্রে প্রথম এবং প্রধান এবং বেজ মেকআপের জন্য প্রয়োজন ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন বিভিন্ন রকমের রয়েছে আপনি আপনার ত্বকের শেড অনুযায়ী ফাউন্ডেশন যাচাই বাছাই করে কিনবেন। ফাউন্ডেশন এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রয়েছে যেমন হুদা বিউটি, ল্যাকমি, Oally,Fitme, ইউনি লিভার, মামাআর্থ, ম্যাক বিভিন্ন ইত্যাদি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের। এই ফাউন্ডেশন গুলোর দাম পড়তে পারেন ২০০ থেকে ২০০০ টাকা।
- এছাড়াও এখন মেকআপ করার জন্য লিকুইড ফাউন্ডেশন রয়েছে যেগুলো খুব দ্রুতই ত্বকের সাথে ব্লেন্ড হয় চাইলে আপনি লিকুইড ফাউন্ডেশনে ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ফাউন্ডেশন গুলোর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। লিকুইড ফাউন্ডেশন এর দাম ৮০০-৯০০ টাকা।
- কনসিলারঃ মেকআপ করার জন্য কনসিলার খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ কনসিলারের মাধ্যমে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল, ব্রনের দাগ অথবা বিভিন্ন রকমের স্পট হাইড করা হয়। ফাউন্ডেশন এর মত কনসিলারও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রয়েছে। এই কন্সিলর গুলোর দাম 200 থেকে 500 টাকা।
- কনটনার এবং ব্লাশারঃ বেজ মেকআপ তৈরি করার পরে নাক এবং চলকে কন্টরিং করার জন্য কন্টেনার এবং মেকআপের উপর লাল যে একটা ভাব তৈরির জন্য ব্লাসার ব্যবহার করা হয়। ব্লাশার সব রকমের প্রাইজ এর মধ্যে রয়েছে আপনি চাইলে সর্বনিম্ন টাকা যেমন ১০০ টাকার মধ্যেও ব্লাশার কিনতে পারবেন।
- লুজ পাউডার এবং কম্প্যাক্ট পাউডারঃ মেকআপ সেট করার জন্য লুজ পাউডার ব্যবহার করা হয় এবং মেকআপের ফিনিশিং টাচ করার জন্য কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করা হয়। হুদা বিউটি, ল্যাকমি , ইত্যাদি বড় বড় ব্র্যান্ডের লুজ পাউডার এবং কম্প্যাক্ট পাউডার পাওয়া যায়। রোজ পাউডার এবং কম্প্যাক্টউড পাউডারের দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
- মেকআপ ফিক্সারঃ বেজ মেকআপ আই মেকআপ nose contouring করার পরে প্রয়োজন মেক আপ টাকে ফিক্স করা। মেকাপ ফিক্স করার জন্য মেকাপ ফিক্সার ব্যবহার করা হয়। এই মেকআপ ফিক্সার টির দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
শেষ কথা - মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম - নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে
আজকের আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদের সাথে মেকআপ করার জিনিসের নাম ও দাম এবং নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে, ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম আপনাদেরকে জানিয়েছি। আশা করছি আজকে আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা আপনার মেকআপ করার ভুল ত্রুটি বুঝতে পারবেন এবং সঠিকভাবে মেকআপ করবেন।
রূপচর্চা এবং মেকআপ সংক্রান্ত যাবতীয় ট্রিকস এন্ড টিপস জানতে নিয়মিত আমার স্বাগতম বিডি ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার অনুরোধ রইলো ধন্যবাদ।
স্বাগতম বিডিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url