কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আপনার কি হাত-পা জ্বালা পোড়া করে?  আপনি জানেন কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন কারণ এই আর্টিকেলে আমি কোন কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে সেই ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে

আমরা অনেকেই মনে করি হাত পা জ্বালাপোড়া করা একটি রোগ কিন্তু না হাত-পা শরীর ভিটামিনের অভাবেও জ্বালাপোড়া করে। অনেক সময় রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকার কারণে বা গায়ে তাপমাত্রা বাড়ার কারণেও হাত পা জ্বালাপোড়া করে। শরীর  হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্ত রাখতে কি কি করনীয় সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পুরো  আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

হাত পা জ্বালা পোড়ার কারন

আমরা অনেকেই মনে করে হাত পা জ্বালাপোড়া করা একটি রোগ কিন্তু না হাত-পা জ্বালাপোড়া করা কোন রোগ নয় বরং বরফ ধরনের কোন রোগের পূর্ববর্তী উপসর্গ। এইরকম উপসর্গ যখন দেখা দেবে তখনই আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে যে নিশ্চয়ই আমাদের শরীরের কোন ফাংশন সঠিকভাবে কাজ করছে না তার জন্য আমাদেরকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই সঠিক পদক্ষেপ বলতে বোঝানো হচ্ছে যে হাত-পা জ্বালাপোড়া কেন করছে সে  সম্পর্কে জেনে আর যেন এরকম সমস্যা না দেখা দেয় এবং খাদ্য তালিকার পরিবর্তনের মাধ্যমে সতর্কতা অবলম্বন করতে । তাহলে চলুন হাত-পা জলার কারণগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
কারন

  • হাত পা জ্বালাপোড়া করার একটি কারণ হতে পারে ডাইবেটিস। কারণ রক্তে উচ্চমাত্রার শর্করা থাকার কারণে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীর হাত-পা জ্বালাপোড়া করে যেটা মেডিকেল সাইন্স এ পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নামে পরিচিত।
  • ভিটামিন বি এর অভাব এর কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। এছাড়াও ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২, থায়ামিন,সায়ানোকোবালামিন, নিকোটানিক অ্যাসিড এর অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে। 
  • নারীদের বিশেষ করে বয়স্ক নারীদের হাত-পা জ্বালাপোড়ার কারণ করার আরেকটি কারণ হলো মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবেও হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
  • শরীরে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি এর অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে এবং ঝিনঝিন করে।
  • যদি কোন কারনে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে হাত-পা এবং শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • দীর্ঘদিন যাবৎ মদ্যপান বা অ্যালকোহল সেবন করার কারণে হাত-পা শরীর এবং হাঁটুতে ব্যথা করে।
  • দীর্ঘদিন যাবত কেমোথেরাপির ওষুধ, এইচআইভির ঔষধ সেবন করার কারণেও হাত পায়ে ঝাঁকানি এবং জ্বালাপোড়া হয়।
  • শরীর জ্বালাপোড়া করা আরেকটি কারণ হলো  কম পানি পান করা। প্রয়োজনীয় তুলনায় কম পানি পান করলে শরীরের কোষ শুষ্ক হয়ে যায় যার কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। তাই হাত পায়ের জ্বালাপোড়া দূর করতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যেস করে তোলা উচিত।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাত-পা জ্বালাপোড়া করা করতে পারে কারণ কিডনির চিকিৎসায় বিভিন্ন রকমের অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হয় যার কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
  • অধিক পরিমাণ দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, রাতে ভালো করে ঘুম না হওয়ার কারণে ও হাত-পা শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • হাত পা জলার একটি কারণ হলো হাতের সঠিকভাবে রক্ত চলাচল না করলে।

হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা

হাত-পা শরীর জ্বালাপোড়া এখন  প্রায় সকল মানুষেরই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে গেলে হাত পায়ের তীব্র জ্বালা হয় যার কারণে ঘুম আসে না। আবার কোন কাজ করতে গেলে হাতের জ্বালার কারণে সঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। পায়ের জ্বালাপোড়ার কারণে পায়ের তালুতে খুব ব্যথা হয় হাঁটতে পারেন না এই সকল সমস্যাতে প্রায় আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের ভূগে থাকেন।

এই সমস্যা গুলি বিভিন্ন রকমের ভিটামিন এর অভাবে হয়ে থাকে। শুধু যে ভিটামিনের অভাবে হয়ে থাকে তা না দীর্ঘদিন যাবত স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ বা কেমোথেরাপির ঔষধ সেবন করার কারণে ও হাত-পা জ্বালাপোড়া করতে পারে।

এই হাত পায়ের জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা রয়েছে। এই ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো যদি আপনি আপনার হাত পায়ে ব্যবহার করেন তাহলে শতভাগ না হলেও ৮০ভাগ আপনি আরাম পাবেন।

তাহলে অবশ্যই আপনার এখন ভাবছেন যে কি সেই ঘরোয়া ওষুধ যেটা ব্যবহার করলে এই হাত পায়ের জালা থেকে দ্রুত উপশম পাবেন। হ্যাঁ বন্ধুরা আমরা এখনই আলোচনা করব সে ঘরোয়া ঔষধের যেটা আমি আপনি সকলেই তৈরি করে এই সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারবো।

  • হাত-পা জ্বলা সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে মধু এবং সরিষার তেল একসাথে ফেটিয়ে নিয়ে হাতে এবং পায়ের তালুতে ম্যাসাজ করলে হাত পায়ের জ্বালাপোড়া কমে।
  • রসুন বেটে তার সাথে গরম পানি মিশ্রিত করে হাত এবং পা যদি আপনি ১৫ থেকে ২০ মিনিট ওই পানিতে ভিজে রাখেন তবে আপনার হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া থেকে আপনি আরাম পাবেন।
  • যদি আপনার পায়ে অধিক পরিমাণ জ্বালাপোড়া করে তবে তেলাকুচা পাতা এবং লবণ একসাথে পেস্ট তৈরি করে পায়ে মাসাজ করবেন তাহলে পায়ের জ্বালাপোড়া কমবে।
  • পায়ে জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য আরেকটি ঘরোয়া উপায় হল নারিকেল তেল এবং এলোভেরা যদি একসাথে মিশ্রিত করে এবং তার সাথে যদি লেবু রস দিয়ে মাসাজ  করেন তাহলে পায়ের জ্বালাপোড়া থেকে আরাম পাবেন। 
  • হাত পা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া কমাতে আরেকটি ভালো উপায় হল ফ্রিজের বরফ ব্যবহার করা। ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে হাতে বা পায়ে যদি আপনি লাগাতে থাকেন তাহলে জ্বালাপোড়া অনেকটা কমবে।

উপরোক্ত পাঁচটি উপায় হলো ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন রকমের পেস্ট তৈরি করে হাত পায়ের জ্বালাপোড়া কমানোর টোটকা। আপনিও যদি আমার মত উপরোক্ত সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তাহলে অবশ্যই ঘরে উপস্থিত উপকরণ দিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করবেন।

 হাত পা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উপায়

হাত-পা জ্বালাপোড়া করা রোগটি মূলত বার্নিং ফিট সিনড্রোম নামে পরিচিত। এবং এই রোগটি খুব সাধারণ বিশেষ করে ৫০ বছর উপরের মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে এই রোগটি বেশি দেখা যায়। এই রোগটি বিভিন্ন রকমের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ক্যালসিয়াম মিনারেল হরমোনের অভাবে হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে আমাদের কিছু পথ অবলম্বন করতে হবে।

হাত পায়ের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পেতে যে সকল উপায় আমাদেরকে অবলম্বন করতে হবে সেগুলো হল,

  • হাত পায়ের জ্বালাপোড়া কমাতে মশ্চারাইজার  ব্যবহারে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • যদি শীতকালেও আপনার হাত-পা জ্বালা করে তাহলে অবশ্যই আপনি ত্বককে আদ্র রাখার জন্য লোশন গ্লিসারিয়ান ব্যবহার করবেন।
  • হাত পা এর জ্বালাপোড়া কমাতে পানি সব থেকে বেশি উপকারী। পরিমাণ কম হয়ে গেলে শরীর জ্বালাপোড়া করে তাই অবশ্যই প্রতিদিন 8 থেকে 10 গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • যে সকল ব্যক্তির হাত-পা জ্বালাপোড়া করে রাতে ঘুমাতে পারেন না তারা অবশ্যই রাতে ঘুমানোর পূর্বে গোসল করে নিবেন।
  • রাতে গোসল করার সময় দীর্ঘক্ষণ গোসল করবেন না, কারণ দীর্ঘক্ষন গোসল করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
  • আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যাদের হাত পা জ্বালা পোড়া করে কিন্তু তারা ঠান্ডা পানিতে গোসল না করে গরম পানিতে গোসল করেন। তাই তাদের উদ্দেশ্যে বলবো গরম পানি বাদ দিয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করার চেষ্টা করবেন।
  • ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে ভিটামিন সি খুব উপকারী। তাই প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম ভিটামিন সি যুক্ত ফল যেমন আমলকি আঙ্গুর বরই ইত্যাদি টক জাতীয় ফল খাবেন।
  • ডিহাইড্রেশন থেকে শরীরকে রক্ষা করতে হবে। আরডি হাইড্রেশন থেকে শরীরে রক্ষা করার জন্য প্রচুর প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  • পায়ের জ্বালাপোড়া কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করুন আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করলে পায়ের জ্বালাপোড়ার থেকে সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • পায়ের এবং হাতের জ্বালাপোড়া কমাতে যতটা পারবেন মাসাজ করবেন। মাসাজ করলে হাত এবং পায়ে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। 
  • হলুদ পায়ের জ্বালাপোড়া কমাতে খুব পরিবেশবান্ধব একটু উপাদান। আপনাকে শুধু কাঁচা হলুদ বা গুড়ো হলুদ সাথে পানি বা সরিষার তেল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে পায়ে লাগান।
  • পায়ের জ্বালাপোড়া থেকে পরিত্রাণ পেতে তেলাকুচাপাতা এবং লবণ একসাথে পেস্ট বানিয়ে হাতে এবং পায়ের ম্যাসাজ করলে জ্বালাপোড়া থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • যেহেতু হাত পায়ের জ্বালাপোড়া হয় কারণ সঠিকভাবে রক্ত চলাচল না হওয়া। তাই আপনাকে সেই সকল ব্যায়াম করতে হবে যেগুলো করলে হাত এবং পায়ে ভালোভাবে রক্ত চলাচল করবে।
  • অ্যালকোহল এবং নেশাজাতীয় খাবার থেকে নিজেকে শতভাগ দূরে থাকতে হবে তাহলে হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া থেকেও আপনি দূরে থাকবেন।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি দের হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ঠান্ডা পানি খুব উপকারী।
  • হাত পা জ্বালাপোড়া হয় ভিটামিন ক্যালসিয়ামের অভাবে। তাই অধিক পরিমাণ ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
  • হাত পায়ের জ্বালা কমাতে অধিক পরিমাণ ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
  • হাত পায়ের জ্বালা কমানোর জন্য শাক-সবজি এবং টাটকা ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য ছোট মাছের ঝোল এবং আঁশ জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া আরেকটি কারণ হলো রাতে ভালোভাবে ঘুম না হওয়া। তাই অবশ্যই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে হাঁটাচলা করার অভ্যাস তৈরি করা।

কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে

কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে করে চলুন জেনে নেই,

  • ভিটামিন বিঃ গবেষণায় জানা গেছে যে,শরীরে ভিটামিন বি এর অভাব দেখা দিলে বেরিবেরি রোগ হয়। আর এই বেরিবেরি রোগের কারণে হাত,পা, পায়ের তালু জ্বালাপোড়া করে।
  • ভিটামিন বি ৬ঃ শরীরের ভিটামিন বি৬ বা ভিটামিন নিয়াসিন এর অভাবে পেলেগ্রা রোগ হয়। আর যখনই পেলেগ্রা নামক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে তখন হাত-পা পায়ের তালু শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • ভিটামিন বি১২ঃ শরীরে ভিটামিন বি১২ বা নিকটনিক এসিডের অভাব হয় তখন শরীর জ্বালাপোড়া করে আর এই উপসর্গকে বলা হয় পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিক।
  • ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই শরীরে যখন ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমে যায় তখন তাপমাত্রা অধিক পরিমাণে বেড়ে যায় যার কারণে হাত পা জ্বালাপোড়া করে।
  • ভিটামিন সিঃ আমরা সবগুলোই জানি যে ভিটামিন সি জনিত খাবার বা ফল খাওয়ার কারণে আমাদের ত্বক সুস্থ থাকে। ভিটামিন সি তে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। কিন্তু যখন ভিটামিন সি এর অভাব হয় তখন মুখ ত্বকে জ্বালাপোড়া ক...
উপরে উক্ত বর্ণনা থেকে বলতে পারি যে শরীরের হাত পা গায়ে জ্বালাপোড়া হয় যে ভিটামিনের কারণে সেগুলো হলো ভিটামিন বি ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি ।

শরীর হাত পা জ্বালা পোড়ার কারন ও প্রতিকার

শরীর হাত-পা জ্বালাপোড়া করার অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে যেগুলো প্রধান সেগুলো হল,
  • হাত পা জ্বালাপোড়া করার একটি কারণ হতে পারে ডাইবেটিস। কারণ রক্তে উচ্চমাত্রার শর্করা থাকার কারণে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীর হাত-পা জ্বালাপোড়া করে যেটা মেডিকেল সাইন্স এ পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নামে পরিচিত।
  • ভিটামিন বি এর অভাব এর কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। এছাড়াও ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২, থায়ামিন,সায়ানোকোবালামিন, নিকোটানিক অ্যাসিড এর অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে। 
  • নারীদের বিশেষ করে বয়স্ক নারীদের হাত-পা জ্বালাপোড়ার কারণ করার আরেকটি কারণ হলো মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবেও হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
  • শরীরে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি এর অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে এবং ঝিনঝিন করে।
  • যদি কোন কারনে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে হাত-পা এবং শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • দীর্ঘদিন যাবৎ মদ্যপান বা অ্যালকোহল সেবন করার কারণে হাত-পা শরীর এবং হাঁটুতে ব্যথা করে।
  • দীর্ঘদিন যাবত কেমোথেরাপির ওষুধ, এইচআইভির ঔষধ সেবন করার কারণেও হাত পায়ে ঝাঁকানি এবং জ্বালাপোড়া হয়।
  • শরীর জ্বালাপোড়া করা আরেকটি কারণ হলো  কম পানি পান করা। প্রয়োজনীয় তুলনায় কম পানি পান করলে শরীরের কোষ শুষ্ক হয়ে যায় যার কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। তাই হাত পায়ের জ্বালাপোড়া দূর করতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যেস করে তোলা উচিত।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাত-পা জ্বালাপোড়া করা করতে পারে কারণ কিডনির চিকিৎসায় বিভিন্ন রকমের অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হয় যার কারণে হাত-পা জ্বালাপোড়া করে।
  • অধিক পরিমাণ দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, রাতে ভালো করে ঘুম না হওয়ার কারণে ও হাত-পা শরীর জ্বালাপোড়া করে।
  • হাত পা জলার একটি কারণ হলো হাতের সঠিকভাবে রক্ত চলাচল না করলে।
প্রতিকার

  • শরীর গা হাত পা জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য অধিক পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  • ভিটামিন সি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং হাঁটাচলা পাশাপাশি ব্যায়াম করতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন এবং পাশাপাশি হাঁটাচলা করার অভ্যেস করবেন।
  • শাকসবজি টাটকা ফল এবং সেদ্ধ করা খাবার খাবেন অর্ধ সিদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। 
  • দীর্ঘদিন যাবত কোন অসৎ সেবন করে থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।
  • অ্যালকোহল ধূমপান মদ্যপান থেকে বিরত থাকবেন।
  • সব সময় নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন এবং হাত পায়ের জ্বালাপোড়া শুরু হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন।
  • আলো বাতাস পূর্ণ গৃহে বসবাস করবেন।
  • দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন পাশাপাশি টক জাতীয় ফল খাবেন।

হাত পা জ্বালাপোড়া ঔষধ-হাত পা জ্বালাপোড়া হোমিও ঔষধ

আপনার কি হাত পা শরীরে জ্বালাপোড়া করে? আপনি কি চাচ্ছেন  হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে হাত পায়ের জ্বালাপোড়া সারাতে? তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই সকল ওষুধ সেবন করতে হবে যেগুলোতে অধিক পরিমাণ ক্যালসিয়াম ভিটামিন ৬ ভিটামিন ১২ এবং ক্যালসিয়াম উপস্থিত।

হাত-পা শরীরে জ্বালাপোড়া হয় ভিটামিনের অভাবে। এছাড়াও মানসিক চিন্তা অনিদ্রা রক্তশূন্যতা পানি শূন্যতা মদ্যপান ডায়াবেটিস দীর্ঘদিন জাতীয় কেমোথেরাপি ইত্যাদি কারণে ও হয়ে থাকে। তাই হাত পা জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য আমাদেরকে সেই সকল ওষুধ গ্রহণ করতে হবে যে সকল ওষুধের অধিক পরিমাণ ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম উপস্থিত।

গর্ভাবস্থায় হাত পা জ্বালাপোড়া 

গর্ভবতী অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের হাত পা জ্বালাপোড়া করে। এটি হয় মূলত শরীরে যদি পানির অভাব পানি শূন্যতা দেখা দেয় তখন। এছাড়াও যদি গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্ত স্বাভাবিকভাবে চলাচল না করে তখন হাত এবং পায়ের জ্বালাপোড়া করে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা যখন হাতের উপর ভর করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তখন নার্ভের চাপ পড়ে যার কারণে রক্ত স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারে না যার কারণে হাতে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করে বা ঝিনঝিন করে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের হাতের এই ঝিমঝিম এবার রক্ত চলাচল না হওয়াকে মেডিকেল ভাষায় কার্পাল টানেল সিনড্রোম বলে। এই কার্পাল টানেল সিনড্রোম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গর্ভবতী মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে। কাজ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন হাতের কব্জির উপর ভর না পড়ে।


এছাড়াও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের পানি হাতে এসে জমা হওয়ার কারণে নার্ভে চাপ পড়ে যার কারণে হাত জ্বালাপোড়া করে। আবার ডাক্তাররা বলেন যে, গর্ভবতী অবস্থায় শরীরে যদি সোডিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে হাত পায়ের জ্বালাপোড়া হয়। উপরোক্ত সমস্যা থেকে গর্ভবতী মাকে  উপশম পেতে হলে রোগ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ সেবন করতে হবে।


তবে হ্যাঁ মনে রাখতে হবে যে, হাত ঝিমঝিম জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হওয়ার কারণে কোন রকমেই ব্যাথা নাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না। একমাত্র ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য-কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে

আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এবং কিভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া দূর করা যাবে সেই সকল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমারে আর্টিকেলটি পড়ে আপনার উপকৃত হবেন। যদি উপকৃত হন তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করে দিবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বাগতম বিডিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url