১০টি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় - পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

কোমর ব্যাথা সারানোর ১৫ টি সহজ উপায়পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় জানার জন্য ইন্টারনেটে বর্তমানে তুমুল ঝড় উঠে গেছে কারণ শতকরা ৫০ ভাগ মানুষ পাইলস রোগে আক্রান্ত। তাই আপনিও যদি পাইলস রোগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান তাহলে একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন কারণ আজকে আপনাদেরকে জানাবো পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় এবং পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়। 

১০টি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় - পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

পাইলস রোগের প্রাথমিক লক্ষণ এবং পাইলস রোগ হলে মলদ্বারের ফোলা কমানোর উপায় কি কি উপায়ে অবলম্বন করলে আপনি চিরতরে পাইলস থেকে রক্ষা পাবেন এগুলো আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো। তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন যেন আপনি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন।

পোস্ট সুচিপত্রঃ  ১০টি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় - পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

.

ভুমিকা - পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

পাইলস রোগ অর্থাৎ অর্শ রোগ যেটাকে মেডিকেল ভাষায় বলা হয় হেমোরয়েড। পাইলস রোগটি অতি প্রাচীন একটি রোগ কিন্তু মানুষ দীর্ঘদিন যাবত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলেও ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে লজ্জা বোধ করেন। কিন্তু এই পাইলস রোগের যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না করা হয় তাহলে অনেক বড় রকমের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পাইলস রোগের কারণে মলদ্বারে ব্যথা অনুভূত হয়, জ্বালাপোড়া করে এবং মল ত্যাগ করতে অনেক কষ্ট হয়। তাই পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় জেনে সেগুলো অবলম্বন করে সুস্থতা অর্জন করতে হবে।

পাইলস এর লক্ষণ

পাইলসের লক্ষণগুলো হলো,

  • মলদ্বারে কোন কারণ ছাড়াই ব্যথা হওয়া
  • মল ত্যাগ করার সময় রক্তপাত হওয়া
  • মলত্যাগ করার সময় মলদ্বারে চুলকানি হওয়া
  • পায়ুপথে আশেপাশের মাংসপিণ্ডগুলো ঝুলে যাওয়্।
  • পায়ুপথের অস্বস্তি জালা অনুভূত হওয়া।
  • এছাড়াও পাইলসের উপসর্গ হলো বায়ু পথে অস্বস্তি অনুভূত হওয়া।

পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় ?

পাইলস অতি কষ্টদায়ক এবং বেদনাদায়ক একটি রোগ। পাইলসে আক্রান্ত হলে কোন ব্যক্তি তার নাওয়া খাওয়া ভুলে শুধু যন্ত্রনা ছটফট করে। একজন ব্যক্তির পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় চলুন সেগুলো জেনে নেই,

  • পাইলস হলে মলদ্বারে জ্বালাপোড়া হয়।
  • পাইলস হলে পায়ুপথে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি বের হয়।
  • পায়ুপথে অজস্র ব্যথা এবং রক্তপাত ঘটে।
  • মলত্যাগের সময় মলদ্বারে আশেপাশে চুলকানি হয়।
  • মলত্যাগের সময় পায়ুপথের আশেপাশের মাংসপিণ্ডগুলো ঝুলির নিচে নেমে যায়।
  • ও এমনকি অনেক ক্ষেত্রে মাংসপিণ্ডগুলো ভেতরে ঢুকে না তখন আঙুল দিয়ে চাপ প্রদান করে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হয়।
  • পাইলস হলে মলত্যাগের সময় খুব কষ্ট হয়। মলত্যাগ হতে চায় না। অত্যন্ত ব্যথা এবং বেদনায় কুকড়ে যান।

একজন ব্যক্তি যখন পাইলসে আক্রান্ত হয় তখন তার উপরোক্ত সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

১০টি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়-পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস রুখতে যেহেতু অতি মারাত্মক এবং ভয়ংকর একটি রোগ তাই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে এই রোগ থেকে দূরে থাকার। আমরা যদি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় গুলো এবং পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা অবলম্বন করে যদি পাইলস থেকে সুরক্ষা থাকে তাহলে এত জ্বালাপোড়া কষ্ট থেকে এবং ক্যান্সার এর মত বড় রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারবো।

আরও পড়ুনঃ লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়

  • কোষ্ঠকাঠিন্যঃ পাইলস থেকে চিরতরে মুখ দিয়ে পাওয়ার জন্য শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য অধিক পরিমাণ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

  • মলত্যাগের চাপ আসলে বিলম্ব না করে অতি দ্রুত সম্ভব মলত্যাগ করতে হবে।
  • মলত্যাগের পরে দীর্ঘক্ষন টয়লেটে বসে থাকা যাবে না।
  • ধূমপানঃ সকল প্রকার নিঃশ্ব জাতীয় দ্রব্য যেমন সিগারেট অ্যালকোহল ইয়াবা ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পানিঃ পাইলস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। তাই আপনি যদি পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় জানতে চান তাহলে প্রথম উপায় হল অধিক পরিমাণ পানি পান করা।
  • মলত্যাগের সময় অধিক পরিমাণ চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • খাদ্য তালিকা থেকে অতিরিক্ত তেল চর্বি মসলাযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে।
  • পায়ুপথের সহবাস করা থেকে বিরত থাকুন নয়তো মাংসের পিণ্ডগুলো ঝুলে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অতিরিক্ত ওজনের কারণেও পাইলস রোগ হয় তাই পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির পাওয়ার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
  • এছাড়াও আপনার যদি কখনো ডায়রিয়া ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে তাহলে আপনি খুব সতর্ক থাকবেন কারণ যে সকল ব্যক্তির ডায়রিয়া হয় তাদের পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • শরীরকে কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত রাখতে অধিক ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন শাক সবজি শসা ইত্যাদি খান এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখবেন, শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন ইত্যাদি উপায় অবলম্বন করলে আপনি পাইলস থেকে ইনশাল্লাহ মুক্তি পাবেন।

পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় 

পাইলস রোগের কারণে পায়ুপথের মাংসপিণ্ডগুলো ফুলের নিচের দিকে ঝুলে যায়। এই মাংসপিণ্ডগুলো যখন ফুলে যায় তখন অনেক ব্যথা হয় এই ব্যথা কমানোর জন্য বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে কিন্তু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করেও পায়েলসের ফোলা কমানো যায়। ঘরোয়া যে সকল উপায় অবলম্বন করা যায় সেগুলো হল,

  • অ্যালোভেরা জেলঃ পায়ুপথের ফোলা স্থানে এলোভেরা জেল দিয়ে আস্তে আস্তে মাসাজ করলে ফোলা কমে যায়এবং এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে পায়ুপথে জ্বালা কম হয় এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়।
  • নারিকেল তেলঃ নারিকেল তেলে উপস্থিত এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য পায়ুপথের ফোলা কমানোর জন্য খুব কার্যকরী। পায়ু পথে যখন মাংসপিণ্ডগুলো ঝুলে যায় তখন নারিকেল তেল দিলে মাংসপিন্ডের ফোলা ভাব কমতে থাকে।
  • অ্যাপেল সিডারঃ পাইলসের ফোলা কমানোর জন্য অ্যাপেল সিডারের ব্যবহার খুব প্রচলিত এবং কার্যকরী। অ্যাপেল সিডার একটি কটন বাড়ি নিয়ে খোলা জায়গায় আস্তে আস্তে দিতে হবে তাহলে ফোলা ভাব কমতে থাকবে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালবেলা এক চামচ অ্যাপেল সিডার খালি পেটে খেলে পাইলস রোগের দ্রুত উপশম ঘটবে।
  • বরফঃ ব্যথা থেকে উপশম পাওয়ার জন্য বরফ খুব উপকারী। বরফ দিলে ব্যথা কমে যায় এবং দ্রুত রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। পাইলসের পোলা ভাব কমানোর জন্য একটি কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে আস্তে আস্তে খোলা জায়গায় মাসাজ করলেন ফোলা ভাব কমতে থাকবে।
  • অলিভ অয়েলঃ পাইলসের প্রদাহ ব্যথা এবং ফোলা কমানোর জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার হয়। অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে ব্যথা দ্রুত কমে যায় এবং ফোলা ভাবও কমে যায়।
  • গরম পানিঃ পাইলসের ব্যথা এবং পায়েলস এর কারনে পায়ুপথের মাংসপিণ্ড ঝুলে পড়া এবং ফোলা ভাব কমানোর জন্য গরম পানির বাষ্প নেওয়া খুব উপকারী। গরম পানির বাষ্প নিলে পাইলসের ফোলা মাংসপিণ্ডগুলো দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে এবং পাইলসের প্রধান থেকেও আরাম পাওয়া যায়।
  • গরম পানির বাষ্পঃ পাইলস এর ফলা কমানোর জন্য গরম পানির বাষ্প নেওয়া খুব উপকারী।

উপরোক্ত উপায়গুলো অবলম্বন করলে এবং উপরে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে যদি আপনি উপকরণগুলো ব্যবহার করেন তাহলে আপনি খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে পাইলসের ফোলা কমাতে পারবেন।

কি খেলে পাইলস ভালো হয়

পাইলস রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খাওয়ার তালিকা এবং খাবারদাবার নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই গুগলে প্রশ্ন করেন যে কি খেলে পাইলস ভালো হয়? পাইলস ভালো করার জন্য যে সকল খাবার খেতে হবে সেগুলো হল,

পায়েলস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তরল খাবার খেতে হবে এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হবে তার জন্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ফাইবার সমৃদ্ধ শাক-সবজি ফলমূল খেতে হবে। 

প্রতিদিন সকালবেলা অ্যাপেল সিডার, লেবুর শরবত,মধু,তরমুজ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শরীরে প্রোটিনের সরবরাহ করার জন্য চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, কিসমিস, খেজুর খেতে হবে। এছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কামরাঙ্গা, বড়ই, আমড়া, আমলকি ইত্যাদি সকল ফল খেতে হবে।

শেষ কথা -পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় - পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় 

প্রিয় পাঠক বন্ধু পাইলস রোগ খুব মারাত্মক একটি রোগ তাই ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে আপনারা পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় গুলো জেনে কিভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন সেই স্বার্থে আজকের আর্টিকেলটি লেখা আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।

এছাড়াও এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে জানিয়েছে যে যদি পাইলস এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে পাইলসের ফোলা কিভাবে কমাবেন। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে আপনার পরিচিত বন্ধু বান্ধবদেরকে শেয়ার করে দেবেন যারা পাইলস রোগে আক্রান্ত যেন তারা ও উপকৃত হতে পারে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বাগতম বিডিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url